ভারতীয় কিংবদন্তী সংগীতশিল্পী এ আর রহমান। তিনি অর্জন করেছেন অস্কারসহ নামি নানা পুরস্কার। তবে তার জীবন নিয়ে একটি বড় প্রশ্ন রয়েছে অনেকের মনে। কেনই বা ধর্ম ও নাম পাল্টালেন রহমান।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আ’নন্দবাজার পত্রিকা জানায়, ‘এ আর রহমান: দ্য স্পিরিট অব মিউজিক’ বইয়ে এই সংগীতকারের জীবনী লিপিবদ্ধ করেছেন নাসরিন মুন্নি কবির। এ ছাড়া বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন তিনি।
বুধবার (৬ জানুয়ারি) এ আর রহমানের ৫৪তম জ’ন্ম’দিন। এ দিন জানা যাক তার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ এ মুহূর্তের কথা।
জ’ন্মের পর নাম রাখা হয়েছিল দিলীপ কুমার। কিন্তু নিজের নামটা পছন্দ ছিল না তার। সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘কিংবদন্তি অভিনেতা দিলীপ কুমারের প্রতি কোনোভাবেই অসম্মান নেই আমার। কেবল আমার মনে হয়েছিল যে আমার স’ঙ্গে এই নামটা যাচ্ছে না।’
যে সময়ে নাম বদলানোর কথা ভাবছেন, সেই সময়ে তার বাবা আচমকা মা’রা যান। বাবার অকালমৃ’ত্যুতে স্তব্ধ হয়ে যায় গোটা পরিবার।
রহমানের মা করিমা বেগম (ধর্মান্তরিত হওয়ার পরের নাম) স’ন্তানদের খাওয়া-পরার জোগান দিতে হিমশিম খেতে থাকেন।
তিনি চিরকালই আস্তিক মানুষ। আজও রহমানের বাড়িতে হিন্দু দেবদেবীর ছবি রয়েছে। পাশাপাশি মা মেরির কোলে যিশুখ্রিষ্টের ছবিও রয়েছে।
খুব কম ব’য়সে কাজকর্ম শুরু করেন রহমান। ১৯৮৬ সালে রহমানের মা করিমা বেগম দেখা করতে যান সুফি পীর করিমুল্লাহ্ শাহ কাদরির স’ঙ্গে। পীর তখন অ’সুস্থ ছিলেন। করিমা বেগম তার শুশ্রূষা করেন।
বাবা-মে’য়ের মতো সম্প’র্ক তৈরি হয় তাদের মধ্যে। তার কিছু বাণী ধীরে ধীরে করিমা ও রহমানের ব্যক্তিত্বে পরিবর্তন আনে। সুফির প্রভাব পড়ে তাদের ও’পর। কিন্তু করিমুল্লাহ শাহ কোনোদিন তাদের ধর্মান্তরকরণের কথা বলেননি।
রহমান এক সাক্ষাৎকারে জানান, ‘সুফি আমাকে শিখিয়েছিল, যেভাবে সূর্য বা বৃষ্টি কখনো মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ করে না তেমনই মানুষেরও একে অপরের মধ্যে ভেদাভেদ করা উচিত না।
তা সে যে ধর্ম বা বর্ণ হোক না কেন। কেউ নিজে থেকে না চাইলে কোনোদিন ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার জন্য জো’র করা হয় না। আমরাও স্বেচ্ছায় গ্রহণ করেছি ইসলামকে।’
ধর্ম পরিবর্তনের আগে নিজের নাম পরিবর্তন করেন রহমান। তার বোনের কোষ্ঠীবিচার করাতে করিমা বেগম এক জ্যোতিষীর কাছে যান। নাম পরিবর্তনের ই’চ্ছা প্রকাশ করেন রহমান।
জ্যোতিষি তাকে দুটি নামের কথা বলেন- আব্দুর রহমান ও আব্দুর রহিম। একজন হিন্দু জ্যোতিষ হয়েও তিনি মু’সলিম নামের পরামর্শ দেন তাকে। শেষে তার মা ‘আল্লাহ্ রাখা’ নামটি রাখেন। আর স’ঙ্গে রহমান। আল্লাহ্ রাখা শব্দের অর্থ, খোদা যাকে রক্ষা করেন।
তারপরই মণিরত্নমের ছবি ‘রোজা’য় সুর দেন এ আর রহমান। এর পর আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।
সম্প্রতি মা করিমা বেগমকে হা’রিয়েছেন এ আর রহমান। তাই এবারের জ’ন্ম’দিনে নেই তেমন কোনো আয়োজন।