ময়মনসিংহের ভালুকা উপজে’লার হবিরবাড়ি ইউনিয়নের ছোট কাশর গ্রামের কৃষক আবু বকর সিদ্দিক। এক মে’য়ে ও তিন ছেলে স’ন্তানের জনক। বড় ছেলে বিয়ে করে আলাদা
সংসার করছে। একমাত্র মে’য়েকে বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন। মেঝো ছেলে গাজীপুরে একটি পোশাক কারখানায় চাকুরী করে। বর্তমানে ছোট ছেলে আর স্ত্রী’কে নিয়ে তাদের সংসার।
ভিটেবাড়ি ছাড়া চাষের যে টুকু জমি আছে তা দিয়ে চলে আবু বকর সিদ্দিকের টানাটানির সংসার। গত ৭ই জানুয়ারি হবিরবাড়ি ইউনিয়নে অন্য একটি কাজে গিয়ে কয়েকজন সংবাদকর্মীর চোখে পড়ে এক জমিতে মানুষের মই টানার দৃশ্য। গাড়ি থামিয়ে কথা হয় এই কৃষক দম্পতির সাথে। এ সময় কৃষক আবু বকর সিদ্দিক বলেন,
বোরো চাষের জন্য ‘৩৫ শতাংশ জমিন ট্রাক্টর দিয়ে চাষের কাজ করেছি। কিন্তু জমিটি হমান (সমান) করে লাগানির (রোপনের) উপযোগী করতে হইবো। কিন্তু টাহার (টাকা) অভাবে
কয়দিন ধরে ক্ষেতে মই দিতে পারতেছি না। অনেক খানেই টেহা পয়সা ধার চাইয়া ব্যর্থ হইছি। পরে কোনো উপায় না পাইয়া বউ পুলারে লইয়া মই দিতাছি।’ আবু বকরের বড় ছেলেও কৃষিকাজ করেন।
কিন্তু নিজের পরিবারের ভরণপোষণের পর বাবাকে সাহায্য করার মতো আর্থিক অবস্থা নেই তার। মেজো ছেলে ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরি করেন। এক মে’য়ে বিয়ে হয়ে শ্বশুরবাড়িতে।
ছোট ছেলে মাহাদী হাসান সুমন দশম শ্রেণির ছাত্র। আবু বকর সিদ্দিকের স্ত্রী মমতাজ বেগম বলেন, বড় ছেলে বিয়া কইরা আলগা (আলাদা) হইয়া গেছে। ছোড (ছোট) ছেলেরে লইয়া থাকি। ছেলেডা ইস্কুলে পড়ে। হাতে কোনো টেহা পয়সা (টাকা) নেই।
কারো কাছে টাকা ধার চেয়ে পাননি। আবার পেলেও সময়মতো শোধ করতে না পারলে অনেক কথা শুনতে হয়। এখন কোনো উপায় না দেইখা স্বা’মীর কাজে সহযোগিতা করতাছি।
’ এই কাজ করায় আমার কোনো লজ্জা বা ক’ষ্ট নেই। ছোট ছেলে সুমন জানান, ক’রোনার কারণে স্কুল বন্ধ। আর বাবারো অনেক ব’য়স হয়েছে। দুইজনে কাজ করলে ক্ষেত সমান হবে না।
তাই মায়ের স’ঙ্গে নেমে পড়েছেন জমি সমান করতে। ভালুকা উপজে’লা কৃষি কর্মকর্তা নারগিস আক্তার জানান, হালের বলদের অভাবে স্ত্রী-স’ন্তানকে দিয়ে মই দেয়াটা খুবই পীড়াদায়ক। আমি দ্রু’তই খবর নিব এই পরিবারটির। স’রকারি প্রনোদনাসহ বিভিন্ন সহায়তা দিয়ে ওই পরিবারকে সহযোগিতা করা হবে। সূত্র: ডি’বিসি নিউজ