বাসর রাত। সবার জীবনে এই রাতটি নাকি অনেক স্বপ্নের, অনেক আশার। ওসব ভাবনার নিকুচি করে ‘বাসরীয়’ বাসনা নিয়ে সাজানো বাসর ঘরে ঢুকলাম। আহা! নতুন বউ কত না প্রশান্তি নিয়ে আমা’র জন্য অ’পেক্ষা করছে।
দরজা খোলাই ছিল। ভে’তরে প্রবেশের পরই লাগিয়ে দিলাম। মনে অন্যরকম অনুভূ’তি।
নিজের ঘরটা নিজেই চিনতে পারছি না। যা সুন্দর করে সাজানো! ওরা পারে বটে- গাঁদাফুল দিয়ে সাজালেও গো’লাপের সংখ্যা কম নয়, রজনীগন্ধাও আছে। তবে গো’লাপের ঘ্রাণটাই প্রকট। ভ্রমর’ আসতে পারে বৈকি! মনে মনে হাসলাম- নিজেইতো ভ্রমর’।
মন থেকে কিছুতেই এই ছটফটানি ভাবটা দূর করতে পারছি না। একবার ভাবলাম বাতিটা নিভিয়েই বিছানায় যাই! পরে চিন্তা করে দেখলাম- নাহ, দরকার নেই। মন বললো-
ভদ্রতাই বংশের পরিচয়।পরিণয় বা প্রেমঘটিত বিয়ে হলে বোধকরি এতটা উ’ত্তেজনা থাকতো না। বিছানাটার দিকে তাকিয়ে আরো বেশি অবাক হলাম। পুরোটা ফুল দিয়ে ঢেকেছে ওরা।
এমনকি বিছানায় প্রবেশের জন্যই ফুল দিয়ে আরেকটা দরজা বানিয়েছে। ভে’তরে কে আছে বোঝার উপায় নেই।
বিছানার পাশে গিয়ে নতুন বউকে মধুর সুরে ডাকলাম- জেসমিন, জেসমিন। কোন সাড়া নেই। ভাবছি ঝট করে নির্লজ্জের মতো বিছানায় উঠে পড়া ঠিক হবে না। দুলাভাই যা শিখিয়ে দিয়েছেন সেই টিপস অনুযায়ী জেনেছি- বাসর ঘরে নববধূ স্বা’মীকে সালাম করে।
তাই আর বিছানায় ওঠা সমীচীন মনে করলাম না। ও নেমে এসে সালাম করবেই। আর আমিও থাক, থাক বলে ওর শ’রীর স্পর্শ করবো। বাকি কাজের প্রস্তুতি ওভাবেই নেব। নাহ, তবুও বের হয় না।
আর কত প্রতীক্ষা- সারাদিনের ক্লান্তি নিয়ে বোধকরি বউ আমা’র বাসর ঘরেই ঘু’মিয়ে পড়েছে।
আশাভ’ঙ্গ হয়ে বিছানায় উঠলাম। ওমা একি! আমা’র বউ গেল কই? বিছানায় কেউ নেই। এক্কেবারে ফাঁ’কা। হায় হায়রে পালাবিতো বিয়ের আগে পালা। কবুল বলে আমায় কুরবানি করে পালালি কেন? এ মুখ আমি কোথায় দেখাব?
এখন কি করব কিছুই ভেবে পাচ্ছি না। বিছানায় একটু হেলান দিয়ে মায়ের উপর মেজাজটা ভীষণ বিগড়ে গেল। সব দোষ মায়ের। মা আমাকে বাড়িতে ডেকে আনলো ছোট চাচার বিয়ের কথা বলে।
বাড়ি এসে সকল আ’ত্মীয়-স্বজনকে দেখে খুশি হলাম। রাতে লম্বা সফর করে এসেছি তাই একটা টানা ঘু’ম দিয়েছিলাম। বাড়িতে কি হচ্ছে না হচ্ছে তার খোঁজ রাখিনি।