সভ্যতার শুরু থেকে পদ্মা-মেঘনা-যমুনায় গড়িয়েছে অনেক জল। এগিয়েছে মানব সভ্যতা। মানুষ পৃথিবী ছাড়িয়ে পৌঁছে গেছে মঙ্গলগ্রহে।
সভ্যতার শুরু থেকেই না’রী-পুরু’ষের বৈষম্য চলে আসছে। যুগে যুগে না’রী বিভিন্নভাবে নি’র্যাতিত হয়েছে। বিশেষ করে না’রীর স’তীত্ব প্রমাণে পুরু’ষ ছাড় দিতে নারাজ। এমনকি এই স’তীত্ব প্রমাণে সীতাকে দিতে হয়েছিলো আ’গুনে আত্মহুতি।
তবে, এই একুশ শতকে এসে সেই কুমারীত্বের প্রমাণই এবার প্যাকেটব’ন্দি। নাম তার ‘আই ভার্জিন পিল।’ এক ক্লিকেই মিলছে অ্যামাজনের ওয়েবসাইটে।
ইন্ডিয়ান টাইমসের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, সম্প্রতি এক ধরনের পিল পাওয়া যাচ্ছে অ্যামাজন অনলাইন বাজারে। সেখানে বলা হচ্ছে কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই এই ও’ষুধে। প্রয়োজন পড়ে না কোনও কা’টাছেঁড়ার। অজ্ঞান করারও প্রয়োজন নেই।
স্রেফ এক পিলেই শ’রীরে জমে যাবে পরিমাণ মতো থকথকে ‘নকল’ র’ক্ত। প্রথম স’ঙ্গ’মের পরই যা সতীচ্ছেদ ভেদ করে বেরিয়ে আসবে ‘মিথ্যা’ কুমারীত্বের ‘প্রয়োজনীয়’ প্রমাণস্বরূপ!
আবার তাতে চলছে অফারও! অ্যামাজনের এই পণ্য বিক্রির খবর জানতে পেরেই প্র’তিবাদ জানান বিভিন্ন শ্রেণি পেশার বিশিষ্টজন।
এ বি’ষয়ে ভারতীয় কথা সাহিত্যিক তিলোত্তমা মজুম’দার জানান, না’রীদের ছোট করতে সমাজের চা’পিয়ে দেওয়া, লালন করা নানা খেলার প্রস’ঙ্গ তো বাদই দিলাম, এ তো রীতিমতো মিথ্যাচার! প্র’তারণা! অবিশ্বাস ও মিথ্যাচার দিয়ে সম্প’র্ক শুরুর হদিশই তো দিচ্ছে এই পিল!
কুমারিত্বের প্রয়োজন আছে কি না তা নিয়ে বলার পাশাপাশি এই প্র’তারণার দিকটিই বা উড়িয়ে দিই কী করে! মে’য়েটি বিশ্বাস করছে, কুমারী না হলে ভালোবাসা কমবে! ছেলেটি ভাবছে, কুমারী হয়ে ধরা দেওয়াই ভালোবাসার প্রাথমিক শর্ত!
তিলোত্তমার কথায়, এই দুই ধারণার ও’পর নির্ভর করেই ও’ষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থাটি যদি তাদের পিল বাজারে আনে, আর তার ব্যবহারও হু হু করে বাড়ে, তা হলে এই সমাজকে যে তার আন্দোলনকে ফের কেঁচে গণ্ডুষ করতে হবে তা বেশ বোঝা যায়।
দু’জন মানুষের একজন অন্যের আস্থা অর্জন করছে এক অন্যায়, আদিম ও অপ্রয়োজনীয় প্রথা দিয়ে, আর অন্যজন সেই ব’র্বর প্রথা দিয়েই নিক্তিতে মেপে মে’য়েটির ‘খুঁতহীন’ শ’রীরকে গ্রহণ করছে- এই পিল তো সেই আচরণকেই মান্যতা দিচ্ছে!