কথায় আছে সংসার সু’খের হয় রমণীর গুণে। শুধু সংসার কেন, যে কোন সম্প’র্কের ভালো মন্দটাই ছেলেদের চাইতে মে’য়েদের মা’নসিকতার ও’পর নির্ভর করে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই, কেননা সহজাত ভাবেই সম্প’র্ক নিয়ে না’রীরা খেলে থাকেন কিছু মাইন্ড গেম!
একটি সম্প’র্ক কোন দিকে যাবে তা একজন পুরু’ষের ও’পর যতটুকু নির্ভর করে, ঠিক ততোটুকুই একজন না’রীর ও’পরেও করে। কোন কোন ক্ষেত্রে এইসব মাইন্ড গেমের কারণে, না’রীর ভূমিকা’টা বরং যেন একটু বেশি।
কেউ স্বীকার করুক আর না করুক, না’রীরা অদ্ভুত কিছু খেলা খেলে থাকেন পছন্দের পুরু’ষের সাথে। খেলা না বলে বাজিয়ে দেখা বললে মনে হয় বেশি ভালো শোনায়। সব না’রী নন, তবে কিছু না’রী অবশ্যই এই কাজটি করে থাকেন।
কেন? পছন্দের পুরু’ষকে নিজের নি’য়ন্ত্রণে রাখা, বাড়তি মনযোগ পাওয়া, চা’প প্রয়োগ করে বিয়ে বা কমিটমেনটে রাজি করানো,নিজের অধিকার ফলানো সহ নানান রকম অদ্ভুত কারণ আছে এর নেপথ্যে।
পুরু’ষের সাথে না’রীদের মনস্তাত্ত্বিক এই খেলাকে মাইন্ড গেইম বলা যেতে পারে। দেখে নেয়া যাক সম্প’র্কের ক্ষেত্রে মে’য়েরা যে মাইন্ড গেমগুলো খেলে থাকেন, সেগুলো আসলে কী কী–
বোকা ও অ’সহায় সেজে থাকা: বেশিরভাগ পুরু’ষ ভাবেন মে’য়েরা বোকা। বিশেষ করে নিজের প্রে’মিকা বা স্ত্রীর ক্ষেত্রে এই ধারণা আরও অনেক বেশি পোক্ত। তবে জেনে রাখু’ন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই ধারণা মে’য়েটি স্বয়ং তৈরি করে থাকে!
কেননা তাতে চোখের অলক্ষ্যেই সম্প’র্কের নি’য়ন্ত্রণ রাখা যায় নিজের হাতে। এটা বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমানিত যে সম্প’র্ক ও সামাজিকতার সুক্ষ্ম চালগুলো মে’য়েরা অনেক বেশি ভালো বোঝে। ফলে বেশিরভাগ না’রীই তার পছন্দের পুরু’ষের সামনে বোকা ও অ’সহায় সেজে থাকার এক প্রকারের নাটক করে,
যে নাটক পুরু’ষটির সাথে তার সম্প’র্ককে করে তোলে অনেক বেশি পোক্ত। আর এই জন্যই বন্ধু মহলে অনেক মারকুটে স্বভাবের একটি মে’য়েই নিজের প্রে’মিকের সামনে দেখা যাচ্ছে একদম পরনির্ভরশীল একজন মানুষে পরিণত হয়।
কিন্তু কেন করে এমন?
এর কারন হিসেবে সাইকোলজিক্যাল এক্সপার্টরা পুরু’ষের বোকামিকেই দায়ী মনে করেন। অনেক ছেলেই বোকা মে’য়েদেরকে বেশি পছন্দ করে। কথাটি ঘুরিয়ে বলতে গেলে বলতে হয়, অনেক ছেলেই চান না তার স’ঙ্গী তার থেকে বেশি বুঝুক বা বেশি বুদ্ধিমতী হোক।
স’ঙ্গিনী আত্মনির্ভর হওয়ার চাইতে তার প্রতি নির্ভরশীল হওয়াটাই অধিক পছন্দ করেন বেশিরভাগ পুরু’ষ। এবং পৃথিবীতে কোন পুরু’ষই চান না যে স্ত্রী বা প্রে’মিকা তার চাইতে বেশি সফল বা বেশি স্মার্ট হোক।
পছন্দের পুরু’ষের এই চাওয়া পূরণ করতেই বা চাওয়া পূরণের মাধ্যমে পুরু’ষটিকে আপন করে পেতেই মে’য়েরা খেলে থাকে এই বোকা ও অ’সহায় সাজার মাইন্ড গেম!একজন পুরু’ষ তাকে সারাক্ষণ দেখেশুনে রাখছেন কিংবা তার সমস্ত খুঁটিনাটি ভালোমন্দের দিকে খেয়াল দিচ্ছেন-এই ব্যাপারটি না’রীরা রীতিমত উপভোগ করেন ও এটাই কামনা করেন সম্প’র্কে।
অপেক্ষা করানো: অপেক্ষা করানো না’রীদের স্বভাব-এ কথা সহজেই স্বীকার করে নেবেন বেশিরভাগ পুরু’ষ। তবে জেনে রাখু’ন,এটা না’রীর সভাব নয়, বরং তার মাইন্ড গেমের সূক্ষ্ম একটা চাল। খুব সাধারণ একটি উদাহরণ দেই- ডেটিং এর ক্ষেত্রে বেশির সময় ছেলেটিকেই অপেক্ষা করতে হয়।
দেখা গেল প্রে’মিক নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছানোর পর প্রে’মিকা বাসা থেকে বের হচ্ছে। এসব ছাড়াও প্রেমের প্রস্তাবে “হ্যাঁ” বলতে দেরি করা সহ নানান বি’ষয়ে না’রীরা প্রে’মিককে অপেক্ষা করান।
কিন্তু না’রীরা কেন এই কাজটি করেন?
অনেকে ভাবেন মে’য়েরা এই কাজটি করে বেশ মজা পান। কিন্তু সাইকোলজিস্টদের মতে মে’য়েরা মনস্তাত্ত্বিক কারনে এই কাজটি করে থাকেন। তারা বলেন এই কাজটির মাধ্যমে মে’য়েরা নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ বলে ভাবতে পারেন।
এবং সম্প’র্কে তার নিজের একটি ভালো অবস্থান গড়ে নেয়ার জন্য এই কাজটি মে’য়েরা করেন। এতে আবার ছেলেরা ভেবে বসবেন না যে এখন থেকে আর স’ঙ্গীর জন্য অপেক্ষা করব না। না করলে কিন্তু হারাতে হবে স’ঙ্গিনীকে!
কথার সূক্ষ্ম প্যাঁচে ফেলা: একটি কাজ মে’য়েরা হরহামেশাই করে থাকেন আর তা হলো, কোন বিশেষ পোশাকে কিংবা মেকআপে তাকে কেমন দেখাচ্ছে তা স’ঙ্গীকে জিজ্ঞেস করা। এটা আরেকটি প্যাঁচালো মাইন্ড গেম। কারণ স’ঙ্গী ইতিবাচক কিংবা নেতিবাচক যাই উত্তর দিক না কেন, মে’য়েরা নিজেদের মনে দুইটি উত্তরের জন্যই জবাব তৈরি করে রাখে। যেমন, যদি স’ঙ্গী বলেন ভালো দেখাচ্ছে না,
তাহলে কী হবে সেটা বলে দেয়ার প্রয়োজন নেই। কিন্তু যদি বলেন ভালো দেখাচ্ছে, স’ঙ্গিনী তখন খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে জিজ্ঞেশ করবেন যে- কোনটা ভালো দেখাচ্ছে? এতদিন কি তবে ভালো দেখাত না?
ভালো না লাগলে আগে বলেনি কেন? ইত্যাদি আরও নানান কথার মারপ্যাঁচ। সুতরাং এই মাইন্ড গেমে পুরু’ষ যাই বলুন না কেন, বি’পদে পড়া এক প্রকার অনিবার্য। ছেলেদের জন্য বলছি মিষ্টি হেসে সোজা করে উত্তর দিন-”তোমাকে সব কিছুতেই ভালো লাগে”, কেননা না’রী এই জবাবটিই শুনতে চান। নিশ্চিত হতে চান যে আপনার চোখে তিনিই সেরা সুন্দরী।
নিজেকে দুষ্প্রাপ্য করে তোলা: বেশিরভাগ না’রীই নিজেকে দুষ্প্রাপ্য করে রাখতে ভালোবাসেন। এমন একটি অবস্থানে নিজেকে নিয়ে যেতে ভালোবাসেন, যেখানে পৌঁছাতে হলে পুরু’ষটিকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়।
যেমন, প্রে’মিককে সময় না দেয়া কিংবা নানান বাহা’নায় সময় দেয়ার বি’ষয়টি এড়িয়ে যাওয়া। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পারিবারিক বাহা’নাই দিয়ে থাকেন না’রীরা এই দুষ্প্রাপ্য করে তোলার কৌশলে।
একজন পুরু’ষ তাকে পাবার জন্য দিনের পর দিন অপেক্ষা করছে, কিংবা যে কোন পরিস্থিতিতে তাকে পাবার জন্য ব্যাকুল-এই ব্যাপারটি নিয়ে না’রীরা এক রকম অহংকার বোধ করে থাকেন।
অন্য পুরু’ষ সম্প’র্কে ঈর্ষা তৈরি করা: এই খেলাটিও বেশিরভাগ না’রী খেলে থাকেন। বিশেষ করে পছন্দের পুরু’ষটি যখন তাকে অবহেলা করে বা খা’রাপ ব্যবহার করে,তখন না’রীর মোক্ষম অ’স্ত্র হচ্ছে অন্য একজন পুরু’ষ। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় না’রীরা ই’চ্ছা করেই অন্য একজন পুরু’ষের দিকে মনযোগী হচ্ছেন।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই পুরু’ষটি হয়ে থাকে প্রে’মিকেরই কোন বন্ধু বা না’রীটির প্রাক্তন প্রে’মিক। অনেক না’রী আবার কাল্পনিক পুরু’ষ চরিত্র তৈরি করে প্রে’মিককে নানান রকম মনগড়া কাহিনী শুনিয়ে থাকেন।
সবমিলিয়ে ব্যাপার আর কিছুই নয়, প্রে’মিকের মনে এক রকমের ঈর্ষা তৈরি করা। এই ঈর্ষা পুরু’ষের মাঝে এত প্রবল হয় যে পছন্দের না’রী অন্য কারো দিকে মনযোগী হচ্ছে এটা চিন্তা করেই তারা আবার প্রে’মিকার দিকে মনযোগী হয়।
আ’গ্রহ না দেখানো: এই খেলাটি অনেক মে’য়েরাই সম্প’র্কের শুরুতে করে থাকেন। স’ঙ্গীর কাছে সে কতোটুকু গুরুত্বপূর্ণ তা পরীক্ষা করার জন্য। মে’য়েরা জ’ন্মগতভাবেই খুব কৌতূহলী স্বভাবের হয়ে থাকে।
সব ব্যাপারেই খুঁটিনাটি মে’য়েদের জানার আ’গ্রহ বেশি থাকে। কিন্তু সম্প’র্কের শুরুতে একটি মে’য়ে তার স’ঙ্গীর কাছে কোন ব্যাপারে জিজ্ঞেস করে জানার ব্যাপারে উদাসীনতা দেখায়, কিংবা স’ঙ্গীর কোন ব্যাপারেই বিশেষ গুরুত্ব বা আ’গ্রহ দেখান না।
এর পিছনে কারন রয়েছে। এর কারন হলো মে’য়েটি জানতে চান ছেলেটির কাছে তিনি কতোটুকু গুরুত্ব পাচ্ছেন। কারন মে’য়েটি ভেবে নেয়,” আমি যদি তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হই তাহলে সে নিজেই আমাকে সব বলবে, আর তাই নিশ্চিত থাকুন যে তাদের অনাগ্রহ প্রকাশ আসলে ভে’তরে ভে’তরে অতি আ’গ্রহের বহিঃপ্রকাশ।