বিয়েতে সাধারণত সিল্কের শাড়ি অথবা লেহেঙ্গা পরেন ভারতীয় না’রীরা। অনেকে লাল রঙের শাড়ি-লেহেঙ্গা পরতে পছন্দ করেন। অনেকে আবার সোনা বা রুপার সুতা দিয়ে এমব্রয়ডারি করা লেহেঙ্গা পরেন। এবার সাঞ্জানা রিশি নামের এক না’রী বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন প্যান্ট-স্যুট পরে।
চলতি বছরের ২০ সেপ্টেম্বর দিল্লির ব্যবসায়ী ধ্রুব মহাজনের স’ঙ্গে ধুমধাম করে বিয়ে হয় ২৯ বছর ব’য়সী ভারতীয়-আমেরিকান উদ্যোক্তা সাঞ্জানা রিশির। এর আগে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে আইনজীবী হিসেবে কাজ করতেন। গত বছর দেশে ফেরেন রিশি।
বিয়েতে সাঞ্জানা রিশি হালকা নীল রঙের প্যান্ট-স্যুট পরেন। ধ্রুব মহাজন পরেন পাঞ্জাবি। তার প্যান্ট-স্যুট পরার বি’ষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক ফ্যাশন ডিজাইনার ও ফ্যাশন সচেতন ব্যক্তি মন্তব্য করেছেন।
ভারতীয় না’রীরা বিয়েতে ঐতিহ্যবাহী পোশাক ছেড়ে প্যান্ট-স্যুট পরা ধরে কি-না, সাঞ্জানা রিশির এ ঘ’টনার পর সেটা নিয়েও ভাবছেন অনেকে।
বিয়ের পোশাক নিয়ে সাঞ্জানা রিশি বলেন, প্যান্ট-স্যুট তার খুব পছন্দের। এ কারণে বিয়েতে হালকা নীল রঙের প্যান্ট-স্যুট পরেছিলেন তিনি।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কয়েক বছর ধরে পশ্চিমা কনেদের প্যান্ট-স্যুট পরতে দেখা যাচ্ছে। ডিজাইনাররা বিয়ের পোশাক হিসেবে ট্রাউজার ও প্যান্ট-স্যুট প্রমোট করছেন। এ ব্যাপারে তারকাদের সমর্থনও পাচ্ছেন তারা।
গত বছর লাস ভেগাসে ‘গেম অব থ্রোনস’র নায়িকা সোফি টার্নারের বিয়ে হয়। তিনি সংগীতশিল্পী জো জোনোসকে বিয়ে করেন। বিয়েতে সাদা ট্রাউজার পরেন সোফি টার্নার।
সম্প্রতি বিয়েতে অনেক তারকায় এ ধরনের পোশাক পরছেন। তবে রাঞ্জানা রিশি যে পোশাকে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন, তা সচরাচর ভারতীয়দের না’রীদের বিয়ের পোশাক হিসেবে পরতে দেখা যায় না।
রিশির বিয়ের পোশাক নিয়ে ভারতের বিবাহবি’ষয়ক এক ম্যাগাজিনের সাবেক সম্পাদক নুপুর মেহতা পুরি বলেন, ‘আমি কখনো বিয়েতে ভারতীয় না’রীদের এ ধরনের পোশাক পরতে দেখিনি।
তারা বিয়েতে সাধারণত ভারতের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরেন। সেই স’ঙ্গে মা-দাদির কাছ থেকে পাওয়া গয়না পরেন। বিয়েতে রিশির প্যান্ট-স্যুট পরার বি’ষয়টি এখানে একেবারে নতুন।’
গেল সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে বিয়ের কাজ সম্পন্নের পরিকল্পনা করেছিলেন সাঞ্জানা রিশি। সেখানে তার ভাই ও অধিকাংশ আত্মীয়-স্বজন থাকেন। আর চলতি মাসে ভারতীয় রীতিতে দ্বিতীয় দফা বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজনের পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু ম’হামা’রি ক’রোনাভা’ইরাসেে কারণে এসব পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।
রিশি ও ধ্রুবর মধ্যে প্রেমের সম্প’র্ক ছিল। ভারতে প্রেমের সম্প’র্কগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রের মতো স্বাভাবিকভাবে দেখা হয় না। এ ব্যাপারে রিশি বলেন, যদিও তার বাবা-মা প্রগতিশীল চিন্তার মানুষ, তারপরও তার বন্ধু ও প্রতিবেশিদের দিক থেকে বিয়ে নিয়ে একটু চা’প ছিল।
রিশি আরও বলেন, ‘তাই গত আগস্টের এক সকালে ঘুম থেকে উঠেই সি’দ্ধান্ত নিলাম, বিয়েটা সেরে ফেলব। তবে যখনই বিয়ে করার সি’দ্ধান্ত নিলাম তখন একটা বি’ষয় মাথায় আসল, বিয়েতে আমি কোন পোশাক পরবো। আমি জানি আমার প্যান্ট-স্যুট পছন্দ। তাই সি’দ্ধান্তটা নিয়েই ফেললাম।’
রিশির স্বা’মী ধ্রুব মহাজন বলেন, ‘বিয়ের দিন তাকে দেখার আগে আমি ভাবিনি যে আসলে সে কোন ধরনের পোশাক পরবে। আমার কাছে এটা কোনো ব্যাপার ছিল না। কারণ আমি জানি সাঞ্জানা রিশি যাই-ই পরুক না কেন, সে একটা সাড়া জাগাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রথম যখন আমি তাকে দেখলাম, সে যে ট্রাউজার পরেছে তা লক্ষ্য করিনি। পরে ভাল করে লক্ষ্য করে দেখলাম, তাকে খুব সুন্দর লাগছে, একেবারে পরীর মতো।’